ঠাকুরগাঁও ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাস বলতে বেশির ভাগ অংশইজুড়ে রয়েছে ফুটবলের ইতিহাস। ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁয়েরফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করে টাউন ক্লাব, যার জন্ম ১৯১১ সালে কয়েকজন তরুণেরসমন্বয়ে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে ঠাকুরগাঁয়ের একটি ফুটবল দলখেলতে যায় ভারতে। সৌহার্দের নিদর্শন স্বরূপ ফুটবল দলটি খেলতে যায় সে দেশেরক্রীড়া সংস্থার আমন্ত্রণে। ঠাকুরগাঁও একাদশ নামে দলটি ভারতের কুচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও ইসলামপুরে ফুটবল খেলে। ঠাকুরগাঁও জেল ক্রীড়া সংস্থারঅধীনে আয়োজিত বিভিন্ন ফুটবল লীগসহ অন্যান্য ফুটবল প্রতিযোগিতায় সে সকল দলঅংশ গ্রহণ করে সেগুলো হলো-টাউন ক্লাব, টাঙ্গন ক্রীড়া চক্র, ঠাকুরগাঁওসমিতি, টাঙ্গন ক্রীড়া ও সাহিত্য সংসদ, উত্তরণ ক্রীড়া চক্র, আগমনী স্পোর্টিংক্লাব, ইউনিটি ক্লাব, সাম্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, সূর্যসেনা ক্রীড়াও সাংস্কৃতিক সংসদ, রুহিয়া প্রগতি সংঘ, রুহিয়া আবহনী ক্রীড়া চক্র, হাজীপাড়া ক্রীড়া ও সাহিত্য সংসদ, সরকারপাড়া আজাদ ক্লাব, ঠাকুরগাঁও স্টেডিয়ামক্লাব, দিশারী স্পোর্টিং ক্লাব, জাগ্রত যুব সংঘ, বিজয় স্পোর্টিং ক্লাব, বোচাপুকুর পোকাতি যুব সংঘ ও পাঠাগার, ফ্রিডম ক্রীড়া ও সাহিত্য সংসদ, রেনেসাঁস্পোর্টিং ক্লাব, ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ, তরুণ সংঘ, পশ্চিম আশ্রমপাড়া যুবসংঘ, টুকু স্মৃতি সংসদ, গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংসদ, নবোদয় সংঘ। ঠাকুরগাঁওবিশেষ করে মজিদ চ্যালেঞ্জ শীল্ড ও কমরুদ্দিন আহম্মদ রানার্স আপ কাপ ফুটবলটুর্নামেন্টে আয়োজন হয়ে আসছে বেশ জাকজমকপূর্ণভাবে। ১৯৪০-এর দশকেঠাকুরগাঁওয়ের তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক আব্দুল মজিদের নামানুসারে এখানে চালুহয় মজিদ চ্যালেঞ্জ শীল্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট। ঠাকুরগাঁও জেলা ক্রীড়া সংস্থাপ্রতি বছর ফুটবল লীগের আয়োজন করে।
· ক্রিকেটঃ
ঠাকুরগাঁও জেলার ক্রিকেটের ইতিহাস খুব পুরনো নয়। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এখানেক্রিকেটের চর্চা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তান আলাদা দেশহিসাবে ক্রিকেটের জগতে নাম লেখায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু তখন ছিলএকমাত্র ঢাকায়। ধীরে ধীরে যখন দেশের সবখানে ক্রিকেটের আলো ছড়িয়ে পড়ে তখনকয়েকজন ক্রিকেট পাগল লোক ঠাকুরগাঁওয়ের মাঝে ক্রিকেট খেলা প্রতিষ্ঠিত করারপ্রয়াস পায়। স্বাধীনতার পর দিনাজপুরে মিম মেমোরিয়াল ক্রিকেট টুর্নামেন্টঅনুষ্ঠিত হতো। ঠাকুরগাঁও ক্রিকেট দলের নাম এন্ট্রি করা হতো ঠিকই, কিন্তুখেলোয়াড়রা নিজস্ব উদ্যোগে সংগৃহীত অর্থের মাধ্যমে ক্রিকেট সরঞ্জাম সংগ্রহকরে শীতকালের ভোরবেলা খোলা ট্রাকে করে দিনাজপুর গিয়ে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকরতো। ১৯৮৭ সাল থেকে জাতীয় ও যুব চ্যাম্পিয়নশীপের জোনাল ভ্যানু হিসাবেঠাকুরগাঁও তখন বেশ নাম কুড়িয়েছে। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলাজাতীয় পর্যায়ের খেলাসমূহ আয়োজন করে বেশ সাফল্যের সাথে। বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিকেএসপি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট ও চট্টগ্রাম জেলাসহ নাম করাক্রিকেট দলের খেলোয়াড়বৃন্দ ক্রিকেট খেলে যায় এই ঠাকুরগাঁওয়ের মাঠে। ২০০৪সালে অনুর্ধ্ব ১৫ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ঠাকুরগাঁও জেলা ক্রীড়া সংস্থারাজশাহী বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সে সময় খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল নাটোরে।তাছাড়া একই বছর ঠাকুরগাঁও রিভারভিউ হাই স্কুল বিভাগীয় স্কুল পর্যায়েরক্রিকেট টুর্নামেন্টের রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ঠাকুরগাঁও জেলাক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে আয়োজিত টুর্নামেন্টে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন সংগঠনসহ আশেপাশের অনেক জেলা থেকেও অংশগ্রহণ করে।
· ব্যাডমিন্টনঃ
শীতকালে শহরের চারদিকে ব্যাডমিন্টন খেলার ধুম পড়ে যায়। জেলা ক্রীড়া সংস্থা সহ কয়েকটি সংগঠন প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
· টেবিল টেনিসঃ
টেবিল টেনিস খেলার চর্চা তেমন নেই। তবে ঠাকুরগাঁও পাবলিক ক্লাবে টেবিল টেনিস খেলা হয়। এছাড়াওঠাকুরগাঁও সরকারী কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, ঠাকুরগাঁও হাই স্কুল, গার্লসস্কুল ও টাউন ক্লাবে টেবিল টেনিস খেলা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকজন টেবিলটেনিস খেলোয়াড় রয়েছেন যারা কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল টেবিল টেনিস খেলোয়াড়হিসেবে পরিচিতি কুড়িয়েছেন।
· হকিঃ
হকি খেলাঠাকুরগাঁওয়ে তেমন হয়নি। তবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে ঠাকুরগাঁওগর্ব শেখ রমিজ। শহরের হাজীপাড়া মহল্লার ডাঃ শেখ ফরিদের পুত্র শেখ রমিজবর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়। শেখ রমিজ দেশে ওবিদেশে হকি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে একজন দক্ষ হকি খেলোয়াড় হিসাবে নিজেকেপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১৯৬৫-৬৬ সালে ঠাকুরগাঁও হাই স্কুলে ও ঠাকুরগাঁও কলেজেপ্রথম হকি খেলা শুরু হয়। আন্তঃ স্কুল প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকবার ঠাকুরগাঁওহাইস্কুল অংশ নেয়।
· বাস্কেট বলঃ
ঠাকুরগাঁও বর্তমানে বাস্কেট বল বেশি খেলা হয় না। তবে স্বাধীনতারপূর্বৈ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্কেট বল খেলার সুযোগ ছিল। সত্তরের দশকে ঠাকুরগাঁওহাই স্কুলের মূল ভবনের পিছনের মাঠে বাস্কেট বল খেলার মাঠ ছিল।
· এ্যাথলেটিক্সঃ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিবছর আন্তঃ স্কুল ও কলেজ এ্যাথলেটিক্সের আয়োজন হয়ে আসছে। ঠাকুরগাঁও জেলার এ্যাথলেটিক্সেগর্ব তোজাম্মেল হক মঞ্জু উচ্চলম্ফে রেকর্ড সৃষ্টি করেছিলেন। ১৯৭৪ সালেউচ্চলম্ফে তিনি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হন। ঠাকুরগাঁও হাইস্কুল ঐ দিন ছুটিঘোষণা করে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস